রাঙ্গামাটি প্রতিনিধি:-
মহাপরিনির্বাণপ্রাপ্ত বৌদ্ধসাধক আর্য্যপুরুষ শ্রীমৎ সাধনানন্দ মহাস্থবির বনভান্ত ১৯২০সালে স্বচ্ছ নীলভরা জলরাশির কর্ণফুলী নদীর তীর ঘেঁষা “মোরঘোনা” গ্রামে হারুমোহন চাকমার পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর মাতার নাম পূণ্যশীলা বীরপুদি চাকমা। তিনি ২৯ বছর বয়সে চট্টগ্রাম নন্দনকানন বৌদ্ধ বিহারে প্রবজ্যা গ্রহণ করেন।
জীবনে সংসারের দুঃখ অনুধাবন করে তিনি ২৯ বছর বয়সে ভরা যৌবনে সংসার ত্যাগ করে বৌদ্ধ সন্ন্যাসী হয়ে দুঃখ মুক্তির জন্য নির্জন গভীর বনে বুদ্ধের প্রদর্শিত মধ্যপন্থায় দীর্ঘ ১২ বছর যাবৎ কঠোর ধ্যান সাধনা করেন। বনভান্তে ধ্যান সাধনারত স্থান ধনপাতা নামক স্থানে বর্তমানে ধনপাতা বন বিহার গড়ে তোলা হয়। ১৯৬০ সালে কাপ্তাই বাঁধ নির্মাণের ফলে কিছু সাধনা পূর্ণ হলে বুদ্ধের মৌলিক ধর্ম জনসমাজের মাঝে নবরূপে প্রতিষ্ঠা করেন। বহু বছর বুদ্ধের মৌলিক ধর্ম প্রচার করে ২০১২ সালের ৩০ জানুয়ারি মহাপরিনির্বাণ লাভ করেন। তাঁর পরিনির্বাণের রেখে যান অগণিত শিষ্য ও আত্মীয়স্বজন।
আজ সেই বৌদ্ধসাধক আর্য্যপুরুষ পরম পূজ্য সাধনানন্দ মহাস্থবির বনভান্তের ১০৪ তম জন্মদিন উপলক্ষে রাঙ্গামাটি সদর উপজেলার জীবতলী ইউনিয়নে অবস্থিত ধনপাতা বন বিহারে রাত ১২টায় বেলুন উড়িয়ে সূচনা করা হয় নানান ধর্মীয় কর্মসূচী। সকাল ৯টায় ভিক্ষুসংঘ ও দায়ক দায়িকারা মূর্তিতে শ্রদ্ধাশীল ভাবে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। মহতী পুণ্যানুষ্ঠানে মঞ্চে উপবিষ্ট পূজনীয় ভিক্ষুসংঘকে ফুলের তোড়ায় বরণের মধ্য দিয়ে বিভিন্ন দান উৎসর্গ করে বৌদ্ধ পুণ্যার্থীরা।পঞ্চশীল প্রার্থনাসহ বুদ্ধমূর্তি দান, সংঘদান, অষ্টপরিষ্কার দান, হাজার প্রদীপ দান, পিন্ড দান, পুষ্পাঞ্জলি উৎসর্গ, বিশ্বশান্তি প্যাগোডার উদ্দেশ্যে টাকা দান করা হয়।
ধর্মীয় সভায় বনভান্তের অমৃতময় বাণীর উদ্ধৃতি দিয়ে ধর্মদেশনা দেন, ঢাকা বাদ্দা মেরুল আন্তর্জাতিক বৌদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষ ধর্মমিত্র মহাস্থবির, কুমিল্লা শালবন শিশু সদনের পরিচালক যুক্তিবাদ মহাস্থবির, রাজবন বিহারের আবাসিক ভিক্ষু জ্ঞাননন্দ মহাস্থবির, বুদ্ধরক্ষিত স্থবির, বেণুবন বৌদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষ প্রিয়নন্দ স্থবির। এছাড়াও দায়কদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সাবেক ব্যারিষ্টার দীপেন দেওয়ান, মগবান ইউপি সাবেক চেয়ারম্যান সুজিত দেওয়ান, বিহার পরিচালনা কমিটির সভাপতি রুপায়ন চাকমা প্রমূখ।