মো: নাজমুল হোসেন রনি,রাঙ্গামাটি:
পার্বত্য এলাকার রাঙ্গামাটির বিভিন্ন উপজেলাতে মাল্টা চাষে দিন দিন কৃষকদের আগ্রহ বাড়ছে। জেলা ও উপজেলার অনেক অনাবাদি পাহাড়ের কৃষি জমির মাটি ও অনুকূল আবহাওয়ায় মাল্টা চাষের উপযোগী হওয়ায় এখানকার কৃষকরা মাল্টা চাষে ঝুঁকছেন। জেলা কৃষি বিভাগের পরামর্শে বারি মাল্টা-১ জাতের মাল্টা চাষ করে অনেকেই সফলতা ও ভাগ্য বদলে যাচ্ছে।
স্থানীয় সূত্রে জানাগেছে, সুস্বাদু এই ফল চাষে অনেক কৃষক নিজেদের স্বাবলস্বী হচ্ছেন। পাহাড়ের এই সবুজ মাল্টায় রসে টইটম্বুর, স্বাদে ও ঘ্রানে অতুলনীয়। চাষিদের উৎপাদিত মাল্টা স্থানীয়দের চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করা হচ্ছে।
রাঙ্গামাটি সদরে কুতকছড়ি, নানিয়ারচরের রামহরি পাড়া,বাঘাইছড়ি সাজেকে,বিলাইছড়ির বিভিন্ন অনাবাদি পাহাড় জমিতে মাল্টা চাষ হচ্ছে। এদিকে সাজেক বাইবাছড়ার মাল্টা চাষী সুশীল জীবন চাকমা জানান, আমার ৮ শতক জমিতে বারি মাল্টা-১ জাতের মাল্টা চাষ করছি। বাগানের সবগুলো গাছে মাল্টা এসেছে। সবুজ পাতার ভেতর থোকায় থোকায় ঝুলছে সবুজ মাল্টা। খেতে সুস্বাদু ও মাল্টায় রয়েছে প্রচুর পরিমান ভিটামিন ‘সি’।
রাঙ্গামাটি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানাগেছে,অক্টোবরের মাঝামাঝি সময় থেকে নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে ভিতরেই মাল্টা পূর্ণতা লাভ করে মৌসুম এর পরে বা আগে ছেড়া হলে মালটার পূর্ণতা হবে না এবং রস কম হবে,মালটা এই সময়ে সবুজ বর্ণের হয়ে থাকে তবে হলুদ বর্ণের করতে হলে কিছু প্যাকিং ব্যবস্থা করতে হবে ,পাহাড়ের হতদরিদ্র কৃষকদের জন্য সেই খরচটা সম্ভব না বিধায় তারা মাল্টার পূর্ণ বয়স হলেও সুবুজ বর্ণের এই মালটা বিক্রয় করে থাকে,তবে পাহাড়ে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায়,মাল্টা বাগানের সঠিক পরিচর্যা করায় ভালো ফলন হয়েছে। এবারে চাষীরা ভালো ফলন পাবেন।
নানিয়ারচর রামহরি পাড়ার চাষী জোয়েস চাকমা জানান,আমার বাগানের ১০০০ টি মাল্টা গাছ রয়েছে। প্রতিটি গাছে ৭০- ৮০ গড়ে টি মাল্টা ধরেছে। প্রতি কেজি মাল্টা ১২০ টাকা করে বিক্রি করতে পারছি এছাড়া প্রতি পিছ ২০-২৫টাকা পাচ্ছি । আগামীতে আরো বেশি ফলনের আশা করছি।
এছাড়া সাজেকের ডানে বাইবাছড়া, বালুঘাট, রেটকাটাসহ বেশ কয়েকটি এলাকায় মাল্টা চাষ করা হয়েছে।
রাঙ্গামাটি সদর উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নাসরিন ইসলাম জানান, মাল্টা ফল চাষে তেমন কোনো বাড়তি খরচ না হওয়ায় খুব সহজেই কৃষকরা এই ফল চাষে লাভবান হতে পারে। পাহাড়ের মাটি মালটা চাষের জন্য উপযোগী, এই ফলটি খুবই সুস্বাদু এবং রসে টইটম্বুর, ফলটি চাষে এখানকার কৃষকদের যে উৎসাহ উদ্দিপনা বাড়ছে তা ধরে রাখতে জেলা পরিষদ ও উপজেলা পরিষদ থেকে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ দিয়ে যাচ্ছে যা এই এলাকায় অর্থনৈতিকভাবে অবদান রাখবে বলে মনে করছি।