বান্দরবান প্রতিনিধিঃ-
বান্দরবান ও রাঙ্গামাটি পার্বত্য এলাকার বিভিন্ন অঞ্চলে অভিযান চালিয়ে নতুন জঙ্গি সংগঠন জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার সাত জন এবং পাহাড়ি বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনের তিন জনসহ মোট ১০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) -৭ ও র্যাব -১৫।
শুক্রবার (২১ অক্টোবর) র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, সম্প্রতি নতুন জঙ্গি সংগঠন ‘জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া’র শীর্ষ নেতাদের ধরতে পাহাড়ে অভিযান শুরু হয়।
সম্প্রতি জঙ্গিবাদে জড়িয়ে নতুন করে কথিত হিজরতের নামে ঘরছাড়া তরুণরা জামাতুল আনসারের হয়ে পাহাড়ি এলাকার আস্তানায় আশ্রয় নেয়। এসব আস্তানায় হিজরত করা তরুণদের ভারি অস্ত্র চালানোর প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।
সম্প্রতি উগ্রবাদে উদ্বুদ্ধ হয়ে স্বেচ্ছায় হিজরতের নামে বাড়ি থেকে নিরুদ্দেশ হওয়া ১৯ জেলার ৫৫ তরুণের তালিকা প্রকাশ করে র্যাব। তাদের মধ্যে ৩৮ জনের পূর্ণাঙ্গ নাম-ঠিকানা প্রকাশ করা হয়। ভারত ও মিয়ানমারের সীমান্তঘেঁষা দুর্গম পাহাড়ে বাড়ী ছাড়া কিছু তরুণ জঙ্গি প্রশিক্ষণ নিচ্ছে। নতুন এ জঙ্গি সংগঠনকে প্রশিক্ষণ দিচ্ছে ‘কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট’ (কেএনএফ) নামে একটি সশস্ত্র গোষ্ঠী।
কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, বেশ কয়েকদিন ধরে টানা অভিযান চালিয়ে বান্দরবান ও রাঙ্গামাটির বিভিন্ন অঞ্চল থেকে নতুন জঙ্গি সংগঠন ‘জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া’র সাত জন এবং পাহাড়ি বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনের তিন জনসহ মোট ১০ জনকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। এসময় তদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার করা হয়।
গতকাল রাঙ্গামাটির বিলাইছড়ির সাইজামপাড়া ও বান্দরবানের রোয়াংছড়ি বাজার এলাকায় র্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখার নেতৃত্বে র্যাব ৭ ও র্যাব ১৫ অভিযান পরিচালনা করে, সৈয়দ মারুফ আহমদ, ইমরান হোসোইর, কাওসার, জাহাঙ্গীর আহমদ, ইব্রাহিম, আবু বক্কর সিদ্দীক, রুফু মিয়া, জৌথান সাং বম, স্টিফেন বম, মাল সম বমকে গ্রেফতার করা হয়। উদ্ধার করা হয় sbbl বন্ধুক ৯টি, sbbl বন্ধুকের ৫০ রাউন্ড, কার্তুজ কেইস ৬২টি, ied হাত বোমা ৬টি, কার্তুজ কেইস ১টি, কার্তুস বেল্ট ২টি, দেশীয় পিস্তল ১ টি, দেশীয় পিস্তল, বিভিন্ন অস্ত্র ওয়াকিটকি সেট কুকিচিং লেখা ১০ টি মানচিত্র উদ্ধার করা হয়।
২০২১ সাল হতে ২৩ সাল পর্যন্ত কুকি চীন এর প্রধান নাথান বমের জামাতুল শারক্বীয়ার প্রধান আনিসুর রহমানের সাথে চুক্তি হয়। গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
পার্বত্য চট্টগ্রামের রাঙ্গামাটি, বান্দরবান ও মিয়ানমার সীমান্ত জুড়ে যখন যৌথবাহিনীর সন্ত্রাস বিরোধী চিরুনি অভিযান চলছে ঠিক সে সময় ভিডিও বার্তাটি দিয়ে ছিলো কেএনএফ।
তিনি আরো বলেন, বান্দরবানের জায়গাটা দুর্গম, ঝুঁকিপূর্ণ এবং পর্যটকরা ঘোরাফেরা করেন। এজন্য স্থানীয় প্রশাসন ওই এলাকায় পর্যটক যেতে নিষিদ্ধ করেছে বলেও জানান তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কেএনএফ পরিচয়ে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের একটি ভিডিও ভাইরাল হওয়া প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এখন পর্যন্ত আমাদের যে তথ্য, তাতে দুর্গম অঞ্চলে স্থায়ী হতে সাপোর্ট লাগে। যে কেউ গিয়ে সেখানে স্থায়ী হতে পারবে না। এ জন্যই বিচ্ছিন্নতবাদী কিছু সংগঠন নিরুদ্দেশ ব্যক্তিদের প্রশিক্ষণ দেওয়া, রশদ সাপ্লাই করা- এগুলো করছে বলে আমরা তথ্য পেয়েছি। এই তথ্যের ভিত্তিতেই আমরা সেখানে অভিযান চালাচ্ছি।