রিপন ওঝা,মহালছড়িঃ-
খাগড়াছড়ি জেলার মহালছড়ি দক্ষিণা কালী মন্দিরে আজ ৭নভেম্বর রোজ সোমবার পূর্ণিমার রাতে অধিবাসের শুভ লগ্নের মধ্যে দিয়ে ষোড়শ প্রহর ঐতিহ্যবাহী রাস মহৌৎসবের নামসংকীর্তন প্রারম্ভ হবে,তা বৃহস্পতিবার ঊষালগ্নে মহানামযজ্ঞের পূর্ণাহুতি অনুষ্ঠান ও নগর পরিক্রমায় সম্পন্ন হবে ২০২২ সালের, ১৪২৯ বজ্ঞাব্দের ৪৭তম রাস মহৌৎসবের মহাযজ্ঞের আয়োজন।
শুভ অধিবাসে উপস্থিত ভক্তবৎসলদের মাঝে শ্রী শ্রী গোবিন্দ মহারাজ সম্প্রদায়ের কীর্তন দলের উপাসক কৃষ্ণভক্ত সুমন পাল। উপস্থিত ভক্তবৎসল ভক্তগণ মনোসহকারে শুভ অধিবাসের কীর্তন শ্রবণ করেন এবং রাতেই মহাপ্রসাদ বিতরণ করা হয়।
উক্ত অধিবাসের শুভক্ষণে দক্ষিণা কালী মন্দিরের ও ৪৭তম পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি রতন কুমার শীল ও সাধারণ সম্পাদক সুনীল দাশ,অর্থ সম্পাদক অংকর ধরসহ সনাতনী সমাজের সকল ভক্তবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য যে, হিন্দুদের কাছে রাস অন্যতম বড় উৎসব। শ্রীকৃষ্ণের ব্রজলীলার অনুকরণে বৈষ্ণবীর ভাবধারার এই উৎসব। কথিত আছে রাস কথাটি এসেছে ‘রস’ থেকে। ‘রস’ মানে আনন্দ, দিব্য অনুভূতি, দিব্য প্রেম বা সার, নির্যাস, আনন্দ, আহ্লাদ, অমৃত ও ব্রহ্ম। ‘তৈত্তিরীয়’ উপনিষদে (২/৭) ‘রস’ সম্পর্কে বলা হয়েছে “রসো বৈ সঃ। অর্থাৎ ‘রস’ ব্রহ্ম ছাড়া আর কিছুই নয়।
কথিত আছে, বস্ত্রহরণের দিন কৃষ্ণ গোপিনীদের কাছে প্রতিজ্ঞা করেছিলেন যে পরবর্তী পূর্ণিমা তিথিতে তিনি তাঁদের সঙ্গে রাসলীলা করবেন। কৃষ্ণের মধুর বাঁশির শব্দ শুনে মুগ্ধ গোপিনীরা নিজেদের কর্তব্য বিসর্জন দিয়ে সংসারের মোহ ত্যাগ করে বৃন্দাবনে উপস্থিত হয়েছিলেন। তাঁরা নিজেদেরকে শ্রীকৃষ্ণের চরণে সমর্পণ করেছিলেন। শ্রীকৃষ্ণ তাঁদের গৃহে ফিরে যেতে বললেও তাঁরা ফিরে যাননি। তাঁদের ভক্তিতে সন্তুষ্ট হয়ে এরপর শ্রীকৃষ্ণ গোপিনীদের অন্তর পরিষ্কার করেন। যতজন গোপিনী, ততজন কৃষ্ণ হয়ে গোপিনীদের ইচ্ছা পূরণ করেছিলেন। যার মাধ্যমে গোপিনীরা জাগতিক ক্লেশমুক্ত হন। এভাবেই রাস উৎসব শুরু হয়েছিল।