মো: হাবীব আজম, রাঙামাটি:-
“সোশ্যাল ইয়ুথ এক্টিভিস্ট ফোরাম” এর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি জনাব, পারভেজ আহমেদ রুমন এর কাছ থেকে তার স্বেচ্ছাসেবী ও যুব সংগঠক হিসেবে পথচলা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, দেশের অন্যতম সুন্দর পাহাড়ি জনপদ বান্দরবান। আমরা অনেকেই তাকে ভালোবেসে “প্রকৃতি কন্যা” বলেও আখ্যা দিয়ে থাকি। কিন্তু এত সৌন্দর্য ও উপমার মাঝেও কোথাও যেন একটা অবহেলা ও পিছিয়ে পড়ার চিহ্ন রয়েই গিয়েছিলো। আর সেই পিছিয়ে পড়া মানুষগুলোকে এগিয়ে নিয়ে আনতে, তাদের সেই সহজ সরল জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে আমি মোঃ পারভেজ আহমেদ রুমন কাজ শুরু করি একজন স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে। যাতে এই পাহাড়ের মানুষগুলোও দেশের বাকি ৬৩ টা জেলার নাগরিকদের মতোই আধুনিকতার ছোঁয়ায় এগিয়ে যেতে পারে এবং নিজেদেরকে সমাজের সুযোগ্য নাগরিক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে পারে ।
এই গল্পের শুরুটা হয় আমার নিজের পরিবার থেকেই। নিজের পরিবারের জ্যেষ্ঠ সদস্যদের দৈনন্দিন বিভিন্ন ছোট ছোট বিষয়ে সচেতন করে তুলতাম। তাদের সবাইকে আনুপ্রাণিত করতাম আধুনিক সমাজ ব্যাবস্থা ও প্রযুক্তির বিভিন্ন দিকের সুফল ভোগ করতে। এরপর ধীরে ধীরে প্রতিবেশী, নিজের এলাকা, উপজেলা ও জেলার গন্ডি ছাড়িয়ে আজ আমার এই সমাজকল্যাণে কাজ করে যাওয়ার গল্প টা ছড়িয়ে পড়েছে পুরো দেশেতেই।
কেবল মাত্র একজন (আমি) স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে সমাজ কল্যাণের লক্ষ্যে যাত্রা শুরু করেছিলাম ২০১৮ তে । দীর্ঘ এই ৫ বছরে কাজ করেছি পার্বত্য অঞ্চলের শিশু ও কিশোর-কিশোরীদের আধিকার আদায়ে ,কাজ করেছি নারীর ক্ষমতায়ন নিশ্চিতকরণে, যুবকদের উন্নয়নে এবং দুর্যোগ ব্যাবস্থাপনাতেও ।
পাশাপাশি বিশেষ ভাবে কাজ করেছি এতিম/আনাথ শিশু এবং শারীরিক প্রতিবন্ধী ও মানসিক ভারসাম্যহীনদের জীবনমান উন্নয়নে।
এছাড়াও করোনা মহামারী কালীন সময়ে নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নিরলস ভাবে দিনরাত একাকার করে স্বেচ্ছায় শ্রম দিয়েছি আসহায় ও ঘরবন্দী মানুষের দুয়ারে দুয়ারে ত্রাণ সামগ্রী ও জরুরী সময়ে অক্সিজেন সিলিন্ডার পৌঁছে দিতে। ঠিক একই ২০২২ সালের ভয়াবহ বন্যাতেও (সিলেট) ছুটে গিয়েছিলাম বানভাসী মানুষের পাশে দাড়াতে । বানভাসী আসহায় সেই মানুষগুলোর কাছে পৌঁছে দিয়েছিলাম বান্দরবানবাসীর পক্ষ থেকে উপহার স্বরূপ ত্রাণ সামগ্রী ।
এভাবেই একজন স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে আমি সমাজের কল্যাণে প্রতিনিয়ত ছুটে চলেছি পাহাড় থেকে সমতলে। সমাজকল্যাণে কাজ করতে গিয়ে আমার সাথে যুক্ত হয়েছে আরো শত তরুণ ও যুবক যারা সবাই এখন আমার সাথে কাধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করে যাচ্ছে আমাদেরই এই সমাজের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নে তথা সমাজকল্যাণে । তাদেরকে নিয়ে গড়ে তুলেছি যুব উন্নয়ন আধিদপ্তর কর্তৃক স্বীকৃতি প্রাপ্ত, পার্বত্য অঞ্চলের অন্যতম সু-পরিচিত সামাজিক, স্বেচ্ছাসেবী ও যুব সংগঠন “সোশ্যাল ইয়ুথ এক্টিভিস্ট ফোরাম”।
আমাদের লক্ষ্য, সকল স্বেচ্ছাসেবীদের সাথে নিয়ে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে এমন ভাবে আমাদের সমাজের কল্যাণে কাজ করে যাবো যেন আমরা এসডিজি এর ১৭ টি লক্ষ্যমাত্রা অর্জনেই স্ব স্ব অবস্থান থেকে ভূমিকা রাখতে পারি এবং ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি উন্নয়নশীল রাষ্ট্রে পরিণত করার যে স্বপ্ন আমরা সবাই দেখছি সেটা বাস্তবে রুপান্তর করে দেখাতে পারি।
আর এভাবেই একদিন আমাদের পার্বত্য তরুণেরা অভিযোগ করার প্রবণতা থেকে সড়ে এসে নিজেদের সমস্যা নিজেরাই সমাধান করতে শিখে যাবে এমন একটা প্রবলেম সলভার প্রজন্মের স্বপ্নই দেখি আমরা ।