নাজমুল হোসেন রনি:-
রাঙামাটির নানিয়ারচর উপজেলা সাবেক্ষং ইউনিয়নের শৈলছড়িতে এখন মিষ্টি কমলা চাষ হচ্ছে। উপজেলা সদর থেকে ১০ কিলোমিটার অদূরে শৈলছড়ির কয়েকটি বাগানে কাচা পাকা রসে টইটুম্বুর কমলা বাগান। যা গ্রামটি মিষ্টি কমলার জন্য বিক্ষাত।
স্থানীয় চাষীদের সাথে কথা বলে জানাগেছে ২০০৭ সাল থেকে এখানে কমলা বাগান করা শুরু হয়েছে। গতকয়েক বছরে কমলার ব্যাপক ফলন এখানে হয়েছে। চাষীরা খরচ বাদেও লাভের মুখ দেখেছে।
শৈলছড়ির কমলাচাষি শিপন চাকমা, দীপন চাকমা, মদুসুদন চাকমা,রঞ্জন মেম্বারের সংসারে সচ্ছলতা ফিরে এসেছে। তাঁদের বাগানে কমলাগাছ রয়েছে ৪০০ থেকে ৫০০টি পর্যন্ত। এসব বাগানে অধিকাংশ কমলাগাছে এ বছর ফলন এসেছে। এ বছর নানিয়ারচরের কমলার ফলনও ভালো হয়েছে।
স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানাগেছে, জুমচাষে উৎপাদন কম হওয়ায় অনেকেই ঝুকেছে কমলা চাষে, জুমচাষের বদলে মিশ্র ফলদ বাগান শুরু করেছেন অনেকেই । মিশ্র ফলদ বাগানে মধ্যে কাঁঠাল, আম, কলা, লিচুসহ অনেক ফল। শৈলছড়িতে যাতায়াত ব্যবস্থা অনুন্নত হওয়ায় চাষিরা তেমন লাভবান হতে পারছেন না।তবে কষ্ট হলেও এএলাকার কমলার ব্যাপক চাহিদা বেড়েছে ঢাকা সহ সারাদেশে। অনেক পর্যটক বাগানে চলে এসে কমলা কিনতে দেখা গেছে।আবার অনেক ব্যবসায়ী পাইকারি কিনে ঢাকা চট্টগ্রামে নিয়ে যাচ্ছেন।
নানিয়ারচর উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ উপজেলা কমলা চাষ হয়েছে ৩৫০ একরে। আর মধ্যে শুধু সাবেক্ষং গ্রামে ২৫০ একর জমিতে কমলা চাষ করা হচ্ছে।
সরেজমিনে অনেকের বাগানে গিয়ে দেখা যায়, ১০ থেকে ১৫ ফুট উঁচু গাছগুলো কমলার ভারে নুয়ে পড়ছে। প্রায় সব গাছে বাঁশের ঠেস দিয়ে দেওয়া হয়েছে। নজর কাড়ছে হলুদ রঙের কমলা।
ইউপি সদস্য রঞ্জন বলেন, নানিয়ারচরের সাবেকক্ষনের কমলা মিষ্টি ও আকারে বড় হওয়ায় বাজারে প্রতি জোড়া ৪০ থেকে ৫০ টাকা করে বিক্রি হয়। তবে চাষিরা বাগান থেকে প্রতি জোড়া ৩০ থেকে ৩৫ টাকা করে বিক্রি করছেন। একেকটি কমলার ওজন ২০০ থেকে ৩০০ গ্রাম পর্যন্ত।
নানিয়ারচর উপজেলা কৃষি অফিস কর্মকর্তা (উপসহকারি)মো: মাসুদুর রহমান জানান,পার্বত্য চট্টগ্রাম কমলা চাষের জন্য উপযুক্ত স্থান। তবে মাটি ও আবহাওয়ার ওপর ভিত্তি করে কমলার ফলন, মিষ্টি ও ছোট-বড় হয়। আগে পাহাড়ে কমলার ফলনে সুনাম ছিল সাজেকের। গত কয়েক বছর ধরে নানিয়ারচর উপজেলা কমলা উৎপাদনে বেশ নাম করছে। কমলাগুলো আকারে বড় ও মিষ্টি। চাষিরাও লাভবান হচ্ছেন।