নাজমুল হোসেন রনি, রাঙ্গামাটিঃ-
রাঙ্গামাটি জেলার নানিয়ারচর উপজেলার পর্যটন খাতে গেল ৫০ বছরে দৃশ্যমান কোনো উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। রাঙ্গামাটি শহরের বৃত্তবান হোটেল ও রিসোর্ট ব্যবসায়ীরা এক বা একাধিক হোটেল-মোটেল, রিসোর্ট গড়ে তুলতে পর্যটক অনেকটাই আশানুরুপ ফল পাচ্ছে শুধু রাঙ্গামাটি শহরের মধ্যে। তবে পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে নানিয়ারচরে পর্যটনকেন্দ্রগুলোর মাধ্যমে আরও ঢেলে সাজানোর আশ্বাস উপজেলা প্রশাসনের।
স্বাধীনতার পরে এ উপজেলার পর্যটন খাতে দৃশ্যমান কোনো উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। এতে এ উপজেলা দিনকে দিন পর্যটকবিমুখ হয়ে পড়ছে। ব্যবসা-বাণিজ্যের আশায় চোখধাঁধানো একাধিক হোটেল-মোটেল, রিসোর্ট গড়ে উঠলে পর্যটক আসবে বলে ভাবছেন ব্যবসায়ীরা, নানিয়ারচরে সাজেকের মত অনেক স্থান রয়েছে।
উঁচু-নিচু পাহাড় আর দৃষ্টিনন্দন হাওড়বেষ্টীত বৈচিত্র্যপূর্ণ উপজেলা নানিয়ারচর। প্রকৃতিগতভাবে গড়ে ওঠা একাধিক মনোরম পরিবেশ আর পাহাড়ের রূপলাবণ্য বিস্তৃত প্রান্তরজুড়ে কাপ্তাই লেকের নীল জলরাশি। একই সঙ্গে টিলার বুকজুড়ে সবুজ গালিচায় মোড়ানো দৃষ্টিনন্দিত মেঘের সমাহার। মূলত প্রকৃতি আর নির্জন নীরবতার স্বাদ নিতেই এখানে দেশ-বিদেশের পর্যটকদের আনাগোনা থাকে সব ঋতুতে। রাঙ্গামাটি জেলার নানিয়ারচরে অনেক পর্যটন স্পট রয়েছে, যার মধ্যে অন্য বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সী আব্দুর রউফ এর সমাধী স্থল, নানিয়ারচর সেতু, কাপ্তাই লেকের অসংখ্য স্থান যা মনোরম পরিবেশ, এছাড়া ঘিলাছড়ির আকাশ আর মেঘ পাহাড়ের মিলন।
তবে পর্যটনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট স্থানীয় লোকজন জানিয়েছেন, স্বাধীনতার পরেও নানিয়ারচরে পর্যটন খাতে কোনো রকমের উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। রাঙ্গামাটি জেলার সব কটি পর্যটন স্পট এখন নতুন ভাবে ঢেলে সাজানো হয়েছে, তবে নানিয়ারচরের পর্যটন স্পটগুলো পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয় করতে কোনো রকমের উদ্যোগ নেই। নেই দূর-দূরান্ত থেকে আসা পর্যটকদের পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা। এতে সেই পুরোনো এবং বছরের পর বছর পড়ে থাকা এসব পর্যটন স্পটে পর্যটকদের উপস্থিতি আশঙ্কাজনকভাবে কমে গেছে।
একাধিক পর্যটক জানান, সুযোগ-সুবিধা ও নতুনত্ব না থাকায় একবার ঘুরতে এলে দ্বিতীয়বার আর আসতে ইচ্ছে হয় না।
রাঙ্গামাটি পর্যটনশিল্পের সঙ্গে জড়িত ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানাগেছে, নানিয়ারচর একটি পর্যটন সমৃদ্ধ এলাকা, জেলা বা উপজেলা প্রশাসন অথবা উন্নয়ন বোর্ডের অধিনে বেশকিছু নতুন পর্যটন কেন্দ্র চালু করলে আরো দর্শনার্থীরা ভীড় করবে বলে ধারনা করছেন।
রাঙ্গামাটি পর্যটন সেবা সংস্থা সূত্রে জানা গেছে, গেল ৫০ বছরে নানিয়ারচরে পর্যটনশিল্পের উন্নয়নে কোনো কাজ হয়নি। এতে পর্যটকবিমুখ হয়ে পড়ছে এ উপজেলায়।
খুব সহজে ঢাকা থেকে নানিয়ারচরে আসা যাবে, ঢাকা থেকে রাঙ্গামাটি ওখান থেকে রাস্তা যোগে নানিয়ারচর ও বুড়িঘাট, আবার ঢাকা থেকে ফেনী হয়ে খাগড়াছড়ি জালিয়াপাড়া সিন্দুকছড়ি সড়ক হয়ে নানিয়ারচর। পাশে অনেক স্পট রয়েছে যা অসাধারণ, সারাদিনে এসব কেন্দ্র ঘুরতে ৪০০-৬০০ টাকার মধ্যে হয়ে যাবে। উল্লখ্যযোগ্য স্থানগুলো হল: নানিয়ারচর সেতু, বুড়িঘাট রাবার বাগান, বুড়িঘাট বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সী আব্দুর রউফ মাজার, ঘিলাছড়ি নালীভ পাহাড়, লাভ পয়েন্ট নানিয়ারচর।
তবে পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে এ জেলার পর্যটন স্পটগুলোর পাশাপাশি কাপ্তাই উপজেলা, বাঘাইছড়ির সাজেকের মত ঢেলে সাজানোর কথা জানান নানিয়ারচরের বাজার ব্যবসায়ী ও স্থানীয়রা।
অন্যদিকে উপজেলা চেয়ারম্যান প্রগতি চাকমা জানান, এই উপজেলায় পর্যটন খাতকে বিকশিত করতে কোন কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠান নিজ উদ্যোগ নিলে আমারা সকল সহযোগিতা করব।